• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৮:৫৭ অপরাহ্ন |
  • English Version
ব্রেকিং নিউজ :
জামালপুরে আউশ ধান আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে করণীয় শীর্ষক অবহিতকরণ কর্মশালা বকশীগঞ্জে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস পালিত জামালপুরে দোস্ত এইড বাংলাদেশ সোসাইটি’হুইল চেয়ার ৫০ জন প্রতিবন্ধী দেওয়ানগঞ্জে ভোটের মাঠে এগিয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মুন্নী আক্তার জামালপুরে এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেল ফতেমা তাবাচ্ছুম নিষ্ঠা জামালপুরে টানা ৩ বার রোবার স্কাউট কমিশনার নির্বাচিত হলেন অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান মুক্তা সরিষাবাড়ীতে গুলি পিস্তল ম্যাগাজিন উদ্ধার, আসামী রুকন পলাতক বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করলেন এমপি কন্যা মাদারগঞ্জে কয়লাবাহী ট্রাক উল্টে চালক নিহত বকশীগ‌ঞ্জে শিক্ষার্থী‌দের সা‌থে ও‌সির মত‌বি‌নিময় সভা

ভিক্ষা নয়, চাকুরী চান শারীরিক প্রতিবন্ধি  শাহিদা

এম এ মোস্তাইন বিল্লাহ
দেওয়ানগঞ্জ :

জামালপুরের  দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ীতে শারিরীক প্রতিবন্ধি শাহিদা জীবনের সাথে যুদ্ধ করে এপর্যন্ত এসেছে, এবার চাকরি চায় সে।

গত ১৮ এপ্রিল প্রতিবন্ধী শাহিদা কে নিয়ে একটা প্রতিবেদন করা হয়, প্রতিবেদনটি সানন্দবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সানন্দবাড়ি হাটবাজারের ইজারাদার মোঃ রেজাউল করিম লাভলু এর সুনজরে আসলে, ১৯ এপ্রিল শাহিদার হাতে নগদ ২,০০০ টাকা অনুদান তুলে দেন। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান আকন্দ ১০০০ টাকা দেন।

প্রকাশ থাকে যে, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চর আমখাওয়া ইউনিয়নের প্রত্যান্ত গ্রাম সানন্দবাড়ী লম্বাপাড়া। একটি হত দরিদ্র পরিবার ছফর আলী তার সহধর্মীনি শামেলা বেগমকে নিয়ে চলে সংসার। তাদের ঘরে জন্ম নেয় একে একে তিন সন্তান। বড় শাহিদা( ২২), বাবুল(১৮) , লাভলু (১৫) । বিধিবাম শাহিদা শারীরিক প্রতিবন্ধি হয়ে জন্মেছে। তার ছোট ভাই বাবুল সে মানসিক ও শ্রবন প্রতিবন্ধি। পিতা ছফর আলী মৃত্যুর পর মাতা শামেলা বেগম সন্তানদের নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছে।

লম্বাপাড়া গ্রামে হতদরিদ্র পরিবারের শারীরিক প্রতিবন্ধি শাহিদার কাঁন্নায় আকাশ বাতাশ ভারি হয়ে আসছে। একদিকে করোনার ভয় অন্যদিকে অভাব অনটন, দেখার কেহ নেই। চর আমখাওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার, রাজনৈতিক নেতা, সমাজ সেবক কেউই পার্শ্বে নেই। প্রতিবন্ধি শাহিদা পিতৃহারা উপার্জনক্ষম পরিবারের বড় মেয়ে।

ছোট ভাই বাবুল মানসিক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধি আরেক ভাই লাভলু বিধবা মাকে নিয়ে চার সদস্যের সংসার।

প্রতিবন্ধি শাহিদা সানন্দবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে এসএসসি পাশ করে। পাশ করে সে বসে নেই। তার আশা আকাক্ষা আরো লেখাপড়া করবে। কিন্ত এই অভাবী সংসারে লেখা পড়া কি সম্ভব? তার মা শামেলা বেগম কষ্টকরে দুপয়সা যোগার করে অনাহারে অর্ধাহারে মেয়ের জন্য টাকা যোগার করে কাগজ কলম কিনে দিত।

সানন্দবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলহাজ্ব  আজিজুর রহমান জানান, শাহিদার লেখা পড়া, পরীক্ষা ফরম ফিলাব করার সময় শিক্ষকরা সহযোগিতা করেছে।

শাহিদার সংগ্রাম থেমে নেই, সে গরীব হলেও তার মনের আশা আকাক্ষা ছিল অনেক বড়। সে সানন্দবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে  ২০১২ সালে এস এস সি ও ২০১৭ সালে সানন্দ বাড়ী ডিগ্রী কলেজ থেকে বি এ পাশ করেন।

প্রতিবন্ধী শাহিদাকে লেখাপড়া চালিয়ে যাবার জন্য কলেজের অধ্যক্ষ সহ শিক্ষকগন উৎসাহ দিয়েছেন।

২০১৭ সালে বিএ পাশ করে নিজের পায়ে দাড়ানোর জন্য শাহিদা ৬ মাস মেয়াদি কম্পিউটার প্রশিক্ষন করেন।

শাহিদা আরো জানায় আমি বাড়ীর সামনে রাস্তার সাথে ছোট দোকান দিছি। অতি কষ্টে কোনরকমে কম্পিউটারের কাজ করি।
বর্তমান করোনাভাইরাসের কারনে লকডাউনের জন্য দোকান বন্ধ। এখন আয় রোজগার না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে বড়ই কষ্টে দিন যাপন করছি। কোন বিষয় জানতে চাইলে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে, বৃষ্টির ফোটার মত চোখে জল গড়িয়ে পড়লো।

সে বলে নির্বাচনের সময় সব প্রার্থী এসে বলেন, আপনারা আমাদের ভোটার, ভোট দেন। পরে দেখবো। নির্বাচনের পরে আর কেহ খোজ খবর নেয়না।
প্রতিবন্ধী শাহিদা আরো বলেন, আমি হাটতে পারি না, কিছু ধরতে পারি না। লেখা পড়া করার জন্য মানুষের দ্বারে হাত পাততে পারি না।

শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহিদা আক্তার বলেন, আমি অনেক কষ্ট করে বিএ পাশ করেছি, ৬ মাস মেয়াদি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ করেছি, আমি কেন মানুষের দান দক্ষিণা ও অনুদান নিয়ে খাবো? চাকুরী করার মতো আমার কি যোগ্যতা নেই? অনেক স্বল্প শিক্ষিত লোকজনও চাকরি করে, তবে বিএ পাস করে আমি কেন চাকরি পাবোনা? তাহলে আমি কোন দেশে বাস করি? কেমন দেশে বাসকরি?

শাহিদা দুচোখের পানি ছেড়ে বলেন- আমি ভিক্ষা চাইনা আমি একটা চাকুরী চাই।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।